কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম

কিভাবে ফ্রিল্যানসিং একাউন্ট খুলবো অথবা ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে কিভাবে ইনকাম করা যায়-এই সকল নানাবিধ প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আমাদের আজকের ব্লগপোষ্ট শুরু করতে যাচ্ছি। সবাইকে মাই আর্টিকেল কুইল এ স্বাগতম।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট  খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকামফ্রিল্যানসিং শুরু করার আগে সবার প্রথমে যেটা করতে হবে তা হলো ফ্রিল্যানসিং একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে। এবং এই কাজ যে সম্পূর্ণ মোবাইল এর মাধ্যমেও করা যায় সেটা আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে আপনাদেরও কিছু শিখাতে চাই।

যা যা থাকছে আমাদের পোস্টে-

ফ্রিল্যানসিং কি?

আমাদের আজকের মূল কথা কিভাবে ফ্রিল্যানসিং একাউন্ট খুলবো হলেও আগে আমাদের কিছু বেসিক কথা জেনে থাকা লাগবে। তাই মূল কথায় আগের আগে অল্প কিছু কথা জানিয়ে রাখতে চাই তাহলে পরবর্তীতে বুঝতে সুবিধা হবে। অন্যথাই ছোট খাটো ব্যাপার গুলোর জন্য অন্যের সাহায্য এর প্রয়োজন পরবে। আসুন তবে দেরি না করে আগে জেনে নেই ফ্রিল্যানসিং কি, এর অর্থ কি বা ফ্রিল্যান্সিং করে আমাদের লাভটা আসলে কি হবে?

ফ্রিল্যানসিং হলো একটা আউটসোর্সিং মিডিয়া। ফ্রিল্যানসিং করে বাইরের দেশের মুদ্রা অর্জন করা যায় তাই একে আউটসোর্স এর মিডিয়া বলা হয়। ফ্রিল্যানসিং হলো এমন একটি পেশা যেখানে ব্যক্তি নিজে ইচ্ছা মতো স্বাধীন ভাবে কাজ করেন। কোনো নির্দিষ্ট কোম্পানির অধীনে কাজ না করে নিজের ইচ্ছে ও দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করার এই মাধ্যমই হলো ফ্রিল্যানসিং। এতে প্রতিটি কাজের জন্য আলাদা আলাদা পারিশ্রমিক দেওয়া হয়ে থাকে।

ফ্রিল্যান্সার রা সাধারণত বিভিন্ন ক্লাইন্ট এর জন্য প্রকল্প ভিত্তিক কাজ করে থাকে সম্পন্ন করার পর ক্লাইন্ট এর চুক্তি অনুযায়ী পেমেন্ট করে থাকে। ক্লাইন্ট নিজের চাহিদা গুলি একজন ফ্রিল্যান্সার কে দিয়ে থাকেন। সেই অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সার কাজ করে দেন। ফ্রিল্যানসিং এর বিভিন্ন সেক্টর আছে। ফ্রিল্যানসিং সেক্টরগুলো হলো ওয়েব ডিজাইনিং, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি। এর মধ্যে কিছু সেক্টর আছে যা নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো। তাই পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে দেখুন।

ফ্রিল্যানসিং কিভাবে শিখবো?

বর্তমান যুগে ফ্রিল্যানসিং করার দিক মানুষ ঝুঁকে পড়ছে কারণ বর্তমান চাকরির বাজার এর অবস্থা খুবি একটা সুবিধার নয়। এমন অনেক গ্রাজুয়েট পাশ শিক্ষার্থীরা বেকার হয়ে পথে পথে ঘুরছে। তাই সাবলম্বী হতে কোনো কোম্পানির অধীনস্ত না হয়ে নিজেই সাবলম্বী হচ্ছে। ফ্রিল্যানসিং আসলে তেমন কঠিন কোনো কাজ নয়। ফ্রিল্যানসিং সহজ একটি কাজ তাই মানুষ জনের আগ্রহ এতে বেশি।ফ্রিল্যানসিং এর ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে হলে আপনাকে ধর্য না হারিয়ে নিরলস ভাবে কাজ করে যেতে হবে।

ছোট বড়ো সকলেই ফ্রিল্যানসিং শিখতে ও করতে পারে। ফ্রিল্যানসিং শিখতে হলে আগে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী সেক্টর পছন্দ করতে হবে। এরপর এই অনুযায়ী ইউটিউব এ ভিডিও দেখে কিছুটা ধারণা নিতে হবে। তাছাড়া অনলাইন কোর্স করার মাধ্যমে কিংবা ব্লগ পোস্ট দেখেও শিখা যায় তবে যদি আপনার ফ্রিল্যানসিং সম্পর্কে কোনো ধারণা না থাকে বা আপনি যদি একদম নতুন হোন, তাহলে সব চেয়ে ভালো হয় নিকটবর্তী কোনো আইটি সেন্টার এর শরণাপন্ন হয়ে ফ্রিল্যানসিং শিখা। 

আইটি সেন্টারে আপনার হাতে খড়ি হলে আপনি বিভিন্ন বেসিক সম্পর্কে ভালো ধারণা হবে। তাই আমার সাজেশন থাকবে আপনার নিকটবর্তী ভালো কোনো আইটি সেন্টারে যেয়ে আপনার ফ্রিল্যানসিং শিক্ষা গ্রহণ করুন এবং নিরলস কাজ করে যান। অবশ্যই দেখে শুনে আইটি সেন্টার নির্বাচন করবেন। যে আইটি এর দক্ষতা অনেক ভালো সেটিতে ভর্তি হবেন। হাল ছাড়বেন না। এভাবে কাজ করলে এবং মনোযোগ দিয়ে কাজ করলে নিশ্চয়ই সফল হবেন। 

কিভাবে ফ্রিল্যানসিং একাউন্ট খুলবো?

ফ্রিল্যানসিং একাউন্ট খুলার বিভিন্ন উপায় আছে । বিভিন্ন প্লাটফর্ম এ আমরা এই ফ্রিল্যানসিং করতে পারি। ফ্রিল্যানসিং শুরু করার জন্য আমাদের প্রথমে একটি সেক্টর নির্বাচন করতে হবে। ফ্রিল্যানসিং এর বিভিন্ন সেক্টর আছে। যেমন ডাটা এন্ট্রি, ব্লগিং, কনটেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক্স ডিসাইন, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি।বিভিন্ন ধরণের ওয়েবসাইটে আপনি বিভিন্ন কাজ করতে পারেন। চলুন তবে জেনে নেই কিভাবে ফ্রিল্যানসিং একাউন্ট খুলবেন,

  • প্লাটফর্ম নির্বাচন করুনঃ সর্বপ্রথম একটি প্লাটফর্ম নির্বাচন করুন।  কিছু জনপ্রিয় ও বিশ্বস্ত প্লাটফর্ম হলো,
  1. Fiverr
  2. Upwork
  3. Freelancer
  4. Toptal
এ প্লাটফর্ম গুলোর নিয়ম-কানুন ও বৈশিষ্ট্য দেখে আপনার নিজের জন্য যদিও উপযুক্ত মনে হয় সেটিকে সিলেক্ট করুন। 
  • সাইন আপ করুন: আপনার পছন্দমত প্লাটফর্মের ওয়েবসাইটিকে সাইন আপ বা জয়েন বাটনে ক্লিক দিন। এরপর আপনার ইমেইল পাসওয়ার্ড এবং যা যা তথ্য তারা চাইবে তা পূরণ করে একটি অ্যাকাউন্ট খুলুন।
  • প্রোফাইল তৈরি করুন: মনে রাখবেন আপনার প্রোফাইলে কিন্তু ক্লায়েন্টের জন্য প্রথম ইমপ্রেশন। তাই আপনার প্রোফাইলটি এমন ভাবে তৈরি করুন যাতে ক্লায়েন্টরা তা দেখে আকর্ষিত হয়। এবং প্রোফাইলটি দেখতে যেন প্রফেশনাল মনে হয়। আপনার দক্ষতা অভিজ্ঞতা শিক্ষা পূর্ববতী কাজে অভিজ্ঞতা ইত্যাদি উদাহরণসহ উল্লেখ করবেন। 
  • পোর্টফোলিও আপলোড করুন: পোর্টফোলিও বলতে কাজের নমুনাকে বুঝানো হয়। যেটি আপনার দক্ষতা প্রদর্শন করা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়। তাই অবশ্যই আপনার প্রোফাইলে আপনার কাজের নমুনা বা পোর্টফলিও আপলোড করবেন। 
  • পেমেন্ট সেটাপ করুন: আপনি ক্লায়েন্ট এর কাজ করে দিলে অবশ্যই তারা আপনাকে পেমেন্ট করবে। তাই পারিশ্রমিক পেতে আপনার পেমেন্ট তথ্য সেটআপ করুন। পেমেন্টের জন্য PayPal, ব্যাংক ট্রান্সফার ইত্যাদি গেটওয়ের সুবিধা ব্যবহার করতে পারেন। 
  • আপনার পছন্দ মোতাবেক কাজ খুঁজুন: এসব প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের কাজ পাওয়া যায় তবে আপনার পছন্দ এবং দক্ষতা মোতাবেক কাজ খুঁজে বের করুন। এবং কোন কাজ পছন্দ হলে আপনি প্রস্তাব পাঠান। 
  • ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগ: কাজ পাওয়ার পর অবশ্যই ক্লায়েন্টের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখবেন। এটি আপনার ভবিষ্যতে কাজ পাওয়ার জন্য অনেক প্রয়োজনীয়। এবং অবশ্যই তাদের মন মোতাবেক কাজ করার চেষ্টা করবেন।

ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খোলার স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন

ফ্রিল্যানসিং একাউন্ট খোলা হলো ফ্রিল্যানসিং এর সবার প্রথম পদক্ষেপ। তাই এটি সঠিক ভাবে করতে হবে। বুলেট পয়েন্ট ব্যবহার করে আপনাদের সহজে দেখাবো কিভাবে একাউন্ট ক্রিয়েট করতে হবে।

  • ফ্রিল্যানসিং প্লাটফর্ম নির্বাচন: Upwork, Freelancer, Fiverr, Toptal এই ধরণের ওয়েবসাইট গুলির যেকোনো একটা নির্বাচন করতে হবে। আমরা Fiverr ওয়েবসাইট দিয়ে আপনাদের অ্যাকাউন্ট খোলার প্রসেসটি বিশ্লেষণ করছি,
  • সাইনআপ প্রক্রিয়া: সাইনআপ করতে Fiverr এর join বাটনে ক্লিক করুন। 
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম
    • এরপর ইমেল ও পাসওয়ার্ড দিয়ে continue এ ক্লিক দিন। ইমেল যাচাই করে সাইন আপ করুন। আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট অর্থাৎ ফেসবুক একাউন্ট দিয়েও লগইন করতে পারেবন।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম
    • এরপর আপনার পছন্দ মতো username দিন। এটি কিভাবে লিখবেন তার উদাহরণ সেখানেই দেওয়া আছে।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম
    • প্রোফাইল এ আপনার একটা প্রফেশনাল ফটো দিয়ে প্রোফাইল সেভ করতে হবে।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম
  • এরপর আপনাকে আপনার পার্সোনাল তথ্য চাওয়া হবে যেমন আপনার নাম ও বিভিন্ন তথ্য চাওয়া হবে যা দিতে হবে। 
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম
এভাবে সব তথ্য দিয়ে আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রোফাইল বানিয়ে ফেলুন। 

ফ্রিল্যান্সিং শিখার স্টেপ বাই স্টেপ গাইডলাইন

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য ধাপে ধাপে কিছু পদক্ষেপ নিতে হয়। আপনাদের আমি এখন বুলেট পয়েন্ট করে আপনাদের বুঝাই দিবো।
  1. ফ্রিল্যানসিং প্লাটফর্ম নির্বাচন: Upwork, freelancer, fiverr, blogger এই ধরণের ওয়েবসাইট গুলির যেকোনো একটা নির্বাচন করতে হবে।
  2. সাইনআপ প্রক্রিয়া: সাইট এ গিয়ে sign up বাটন এ ক্লিক করে প্রথমে সাইনআপ করুন। এর পর প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আপনার ইমেল টি যাচায় করে নিন।
  3. প্রোফাইল তৈরী: ইমেল যাচাই হয়ে যাওয়ার পর আপনাকে আপনার প্রোফাইল বানাতে হবে। এখানে আপনার দক্ষতা ,অভিজ্ঞতা, এবং আপনার পোর্টফোলিও যোগ করতে হবে।
  4. কাজ খোঁজা: বিভিন্ন প্রজেক্ট এ আপনি কাজ করতে চান এর একটা প্রস্তাবনা দিন। ক্লাইন্ট এর সাথে যোগাযোগ করে তাকে কনভেন্স করার ট্রাই করুন।
  5. কাজ সম্পন্ন করা: কাজ পেয়ে গেলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে ক্লাইন্ট কে জমা দিয়ে কাজ সম্পন্ন করুন।

ফ্রিল্যানসিং এর বিভিন্ন সেক্টরগুলো কি কি

বর্তমান যুগে ফ্রিল্যানসিং করার দিক মানুষ ঝুঁকে পড়ছে কারণ বর্তমান চাকরির বাজার এর অবস্থা খুবি একটা সুবিধার নয়। ফ্রিল্যানসিং এর প্রধান কয়েকটি সেক্টর নিয়ে আলোচনা করবো। ফ্রিল্যানসিং এর ক্ষেত্রে ক্ষেত্রে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এবং ওয়েব ডিজাইন একটি অন্যতম প্রধান সেক্টর । এখানে ওয়েবসাইট তৈরী ও ডিজাইন করা হয়। ওয়েবসাইট তৈরী ও ডিজাইন করার মাধ্যমে আপনি ভালো পরিমানের অর্থ আয় করতে পারবেন। 

ওয়েব ডিজাইন এর সাথে গ্রাফিক্স ডিজাইন ও একটি সেক্টর। ক্লাইন্ট এর ব্র্যান্ড বা প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী আপনাকে লোগো তৈরী করে দিতে হবে। গ্রাফিক্স ডিজাইন এ শুধু লোগো না, এর মাঝে পোস্টার ডিজাইন, ব্যানার বিভিন্ন নাম ডিজাইন, ডিজিটাল আর্ট ইত্যাদি ও অন্তর্ভুক্ত। গ্রাফিক্স ডিজাইনার রা নিজেদের কাজের জন্য অনেক বড় অংকের টাকা পেয়ে থাকেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনার দের ইনকাম অনেক। তবে এই কাজের জন্য দরকার অনেক দক্ষতা ও পরিশ্রম। 
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট  খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম
ডিজিটাল মার্কেটিং সেক্টর এ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, SEO, ব্লগিং, ইমেইল মার্কেটিং এসব অন্তর্ভুক্ত। ডিজিটাল মার্কেটিং এখন সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন একটি সেক্টর। প্রায় সকলেই ডিজিটাল মার্কেটিং দিয়ে ফ্রিল্যানসিং করেন। এর কারণ হচ্ছে এর কাজ তুলনামূলক সহজ এবং সহজেই অনেক টাকা ইনকাম করা যায়। স্টুডেন্টরা এই কাজ করে থাকে পড়াশোনার পাশাপাশি। এগুলি ছাড়াও আরো অনেক সেক্টর রয়েছে যা নিয়ে আজ আর কথা বাড়াচ্ছি না। অন্য আরেক সময় এই নিয়ে আলোচনা করবো । 

তবে সেক্টরগুলোর হলোঃ
  1. কনটেন্ট রাইটিং,
  2. ডিজিটাল মার্কেটিং,
  3. ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট,
  4. ওয়ার্ডপ্রেস,
  5. ভিডিও এডিটিং,
  6. লোগো ডিজাইন,
  7. অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট,
  8. আন্ড্রোয়েড ডেভেলপমেন্ট,
  9. ভিডিও ক্রিয়েশন,
  10. কোডিং
আরো অনেক ধরনের কাজ রয়েছে যেগুলো ফ্রিল্যানসিং সেক্টরে পাওয়া যায়। 

কিভাবে মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যানসিং করবো

মোবাইল দিয়ে কিছু ছোট ছোট কাজ আছে যা করে ফেলা যায়। মোবাইল দিয়েও টাকা ইনকাম করা যায়। অনেকে ভাবে মোবাইল দিয়ে হইত অ্যাড দেখে বা গেম খেলে টাকা ইনকাম করতে হয়। বিষয় টা আসলে তা না। এগুলি আসলে ভুল কথা। অ্যাড দেখে আপনার তেমন কোনো টাকা আসবেনা।  মোবাইল দিয়ে ইনকাম করতে হলে আপনাকে ডাটা এন্ট্রি এর কাজ করতে হবে। ছোট ছোট এরকম কাজ গুলি মোবাইল দিয়ে আপনি সেরে ফেলতে পারেন।

তবে আপনার হাতের ফোন টি স্মার্ট ফোন হতে হবে অবশ্যই। আর হ্যাঁ, আপনার ইন্টারনেট কানেকশন থাকতে হবে। ডাটা এন্ট্রি করে অবশ্য আপনার খুব বেশি একটা টাকা ইনকাম হবে না। এর চেয়ে অ্যাডভান্সসড কাজ করতে চাইলে আপনি ব্লগিং করতে পারেন । ব্লগিং করে আপনি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করতে পারেন অনায়াসে। ব্লগারডটকম আপনার জন্য হতে পারে একটি আদর্শ ওয়েবসাইট। ব্লগার এ নিজের ইচ্ছা মতো আপনি লেখা লেখি করতে পারেন। 

কিভাবে ফ্রিল্যান্সার ব্যাংক একাউন্ট করবো 

ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করার জন্য একটা ব্যাংক একাউন্ট থাকা দরকার। এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনি যে টাকা আয় করবেন টা সরাসরি আপনার ব্যাংক এর ব্যালান্স এর সাথে যুক্ত হবে। তাই আপনার আর্থিক লেনদেন করতে ব্যাংক একাউন্ট দরকার । আপনি ক্লায়েন্ট এর কাজ করে দিলে অবশ্যই তারা আপনাকে পেমেন্ট করবে। বাংলাদেশে বিভিন্ন ব্যাংক ফ্রিল্যান্সার দের জন্য সেবা প্রদান করে থাকে। নিচে কয়েকটি ব্যাংক এর নাম উল্লেখ করা হলো:

  1. ডাচ বাংলা ব্যাংক: আপনি মোবাইল ব্যাংকিং করতে চাইলে ডাচ বাংলা ব্যাংক এর রকেট ব্যবহার করতে পারেন। এতে লেনদেন খরচ তুলনা মূলক কম। এতে অনলাইন ব্যাঙ্কিং সুবিধা রয়েছে। যেকোনো প্রান্তঃ থেকে আপনি এক্সেস পাবেন।
  2. ব্র্যাক ব্যাংক-অ্যাপোলো একাউন্ট: এই অ্যাপোলো একাউন্ট ফ্রিল্যান্সার দের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকে ।এতে লেনদেন খরচও তুলনা মূলক কম। অনলাইন সুবিধা রয়েছে। এটি আবার মাল্টিকার্রেন্সি কার্ড প্রদান করে।তাই বিদেশী ডলার লেনদেন করতে পারবেন।
  3. সিটি ব্যাংক: সিটি ব্যাংকের একাউন্ট ফ্রিল্যান্সার দের জন্য বিশেষ সুবিধা দিয়ে থাকে এবং তাঁদের পছন্দ এর অন্য তম তালিকায় সিটি ব্যাংক। 
  4. ইস্টার্ন ব্যাংক(EBL): এই ব্যাংক কম খরচে লেন লেন সুবিধা দেয়। ২৪ ঘন্টা এর এটিএম সুবিধা পাওয়া যায় বলে ফ্রিলান্সার রা এই ব্যাংক পছন্দ করেন।

ফ্রিল্যানসিং থেকে আয় কেমন হয়

ফ্রিল্যানসিং থেকে আয় করা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এবং বিভিন্ন পরিস্থিতির উপর নির্ভরশীল। ফ্রিল্যানসিং শুরুর সময় আপনার ইনকাম কম হবে। কারণ আপনি তখন আপনার প্রথম স্টেজ এ থাকবেন। তাই আপনার প্রজেক্ট গুলো ছোট ছোট হবে। তাঁদের মূল্যয়ন সাধারণত নিম্ন হয়ে থাকে। আপনার ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম হতে পারে। কিছু সাধারণ উদাহরণ দেওয়া যায়,
কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং একাউন্ট খুলবো? - ফ্রিল্যান্সিং করে মোবাইল দিয়ে ইনকাম
  1. ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: আপনি যদি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর কাজ করেন এবং দক্ষ হোন তাহলে আপনার প্রত্যেকটি প্রজেক্ট থেকে প্রায় 500-5000$ পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন। অতএব বুঝতেই পারছেন কত বড়ো অংক আপনি একটি প্রজেক্ট থেকেই ইনকাম করে ফেলতে পারেন।
  2. গ্রাফিক্স ডিজাইন: আপনি যদি ওয়েব গ্রাফিক্স এর কাজে পারদর্শী হোন এবং দক্ষ হোন তাহলে আপনার প্রত্যেকটি লোগো ডিজাইন থেকে প্রায় 100-1000$ পর্যন্ত ইনকাম করতে পারেন। এর চেয়েও বেশি ইনকাম করতে পারেন।আপনাকে ধারণা দেওয়ার জন্য আমি এটি একটা সাধারণ এমাউন্ট বললাম।
  3. কন্টেন্ট রাইটিং:  কন্টেন্ট রাইটিং এ আপনার প্রথম প্রজেক্ট সাধারণ ভাবেই নিম্ন দামে হবে। যেমন ধরুন 20$ থেকে 100-150$ এর মধ্যে। তবে ভালো কোয়ালিটির লেখা লেখি করলে ক্রমাগত এর দাম বাড়বে। আর এই কাজ করতে আপনার বেশি সময় দিতে হবে না। সহজেই আপনি আপনার কাজ শেষ করে ফেলতে পারবেন।
  4. ডিজিটাল মার্কেটিং: আপনার মূল দক্ষতা যদি হয় ডিজিটাল মার্কেটিং তাহলে আপনি অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন অনায়াসেই। SEO, ব্লগিং, সাপ্লাই চেন ইত্যাদি কাজ করে লাখ টাকা ইনকাম করা যায় খুব সহজেই।

শেষ কথা

ফ্রিল্যানসিং একটি অত্যন্ত লাভজনক ও স্বাধীন একটি পেশা। এটি এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে আপনি আপনার দক্ষতা ও সৃজনশীলতা কে কাজে লাগিয়ে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ফ্রিল্যানসিং শুরু করার জন্য আপনার বিভিন্ন জিনিস প্রয়োজন হবে। বিভিন্ন ব্যাপার এর দিক নজরে রেখে আপনাকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আপনার দক্ষতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আপনার ফ্রিল্যানসিং সেক্টর নির্বাচন করতে হবে।

এরপর সেক্টর মনস্থির করার পর আপনার পরবর্তী কাজ হবে ফ্রিল্যানসিং একাউন্ট খোলা। এটি একটি সহজ প্রক্রিয়া তাই বিভ্রান্ত হবার কিছু নাই। সুন্দর করে আপনার প্রোফাইল টি সাজাতে হবে। কারণ দেশ ও দেশের বাইরের ক্লাইন্ট আপনার প্রোফাইল দেখবে এবং আপনার প্রোফাইল দেখে আপনাকে জাজ করা হবে। প্রোফাইল ভেরিফিকেশন এর পর পেমেন্ট এর সেটাপ টি ও করে ফেলতে হবে। এটি ও গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।

ফ্রিল্যান্সার দের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ব্যাংক একাউন্ট খোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি পেমেন্ট গ্রহণের জন্য এবং পেইমেন্ট প্রক্রিয়া সহজ ও নিরাপদ করার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন নামি দামি ব্যাংক আমাদের এই সেবা গুলি দিয়ে থাকে। তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু ব্যাংক অনেক কম খরচে এই সেবা গুলো প্রদান করেন এবং ফ্রিল্যানসার দের জন্য আলাদা একটি ব্যাংক একাউন্ট ই রয়েছে। তাই বিভিন্ন ফেসিলিটি পাওয়া যায়।

ফ্রিল্যানসিং থেকে আয় নির্ভর করে আপনার কাজের ও দক্ষতার ওপর। ফ্রিল্যানসিং এর ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করতে হলে আপনাকে ধর্য না হারিয়ে নিরলস ভাবে কাজ করে যেতে হবে। ইনাকম শুরুর একটা প্রসেস আছে। যার মধ্যে দিয়ে আপনাকে যেতে হবে। হাল ছাড়লে চলবে না। শুরু তে টাকা আসতে একটু সময় দিতে হবে। আপনার আশেপাশে পরিচিত অভিজ্ঞ কোনো ফ্রিল্যান্সার এর শরণাপন্ন হয়ে সাহায্যের আবেদন করে নিজের ভুল গুলি ঠিক করে নিতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাই আর্টিকেল কুইল এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url