বাংলাদেশ থেকে সফল ড্রপশিপিং : নতুনদের জন্য সম্পূর্ণ গাইড [২০২৪]
ড্রপশিপিং হল একটি জনপ্রিয় ই-কমার্স মডেল যেখানে আপনাকে নিজের ইনভেন্টরি মজুদ করতে হয় না।এবং শিপিং এর ঝামেলা কম থাকে।বাংলাদেশ থেকে ড্রপশিপিং শুরু করতে চাইলে আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জেনে থাকা অতি প্রয়োজন।
আজ আমরা এই ব্লগে সকল ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য ও প্রতিটি ধাপ সম্পর্কে আলোচনা করব। আশা করি সম্পূর্ণ ব্লগটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
সূচিপত্র: বাংলাদেশ থেকে সফল ড্রপশিপিং : নতুনদের জন্য সম্পূর্ণ গাইড [২০২৪]
- ড্রপশিপিং কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে
- ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি
- বাংলাদেশ থেকে ড্রপশিপিংয়ের জন্য উপযুক্ত প্লাটফর্ম নির্বাচন
- বিশ্বস্ত সরবরাহকারী এবং সংযোগ স্থাপন
- পেমেন্ট গেটওয়ে এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা
- মার্কেটিং ও অ্যাডভার্টাইজমেন্ট স্ট্রাটেজি
- অর্ডার প্রক্রিয়াকরণ এবং শিপিং ব্যবস্থা
- গ্রাহক সেবা এবং সহায়তা প্রধান
- কিভাবে ড্রপশিপিং ব্যবসা উন্নতি করবেন
- বাংলাদেশে ড্রপশিপিং এর আইনি এবং ট্যাক্স বিষয়ক চিন্তাধারা
- বাংলাদেশ থেকে সফল ড্রপশিপিং নিয়ে লেখকের মন্তব্য
ড্রপশিপিং কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে
ড্রপশিপিং হল একটি ব্যবসায়িক মডেল যেখানে আপনি একটি অনলাইন স্টোর চালু করেন
কিন্তু পণ্যগুলো আপনার নিজের কাছে মজুদ রাখেন না। অর্থাৎ পূর্বে অর্ডার গ্রহণ
করেন এবং এরপরে সেই অর্ডার অনুযায়ী পণ্য ডেলিভারি করেন। আপনি যখন কোন পণ্য
বিক্রয় করেন, তৃতীয় পক্ষের সরবরাহকারী তখন সেই পণ্য সরাসরি আপনাকে তার কাছে
পাঠিয়ে দেয়।
এই কারণেই এই ড্রপশিপিং ব্যবসাটি অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং ঝুঁকি মুক্ত। আপনি যদি কোন
ব্যবসার স্টার্টআপ করতে চান তবে ড্রপশিপিং আপনার জন্য সর্বোত্তম একটি ব্যবসা।
ড্রপশিপিং করতে আপনার কোনো প্রকার ইনভেস্টমেন্ট এর প্রয়োজন হয় না।
ট্রাডিশনাল ই-কমার্স ও ড্রপশিপিং ব্যবসার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হল এতে
ব্যবসায়ীদের নিজস্ব স্টক রাখতে হয় না কিন্তু অপরপক্ষে ট্রেডিশনাল ই-কমার্স
ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে পণ্য কিনে তাই স্টক করতে হয় যা ব্যবসার জন্য অতিরিক্ত খরচ
ও ঝুঁকির কারণ হতে পারে।
ড্রপশিপিংয়ে আপনি পূর্বেই পন্যের অর্ডার গ্রহণ করেন এবং অর্ডার অনুযায়ী তা
পরবর্তীতে গ্রাহকের কাছে প্রেরণ করেন। আশা করি এতক্ষণে বুঝা গেছেন ড্রপশিপিং কি
এবং এর কাজ কিভাবে করা হয়।
ড্রপশিপিং ব্যবসা শুরু করার প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি
ড্রপশিপিং শুরু করার জন্য আপনার প্রধান কাজ হচ্ছে বাজার বিশ্লেষণ ও গবেষণা করা। বাজার বিশ্লেষণ করা প্রতিটি ব্যবসার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কোন পণ্য বা সেগমেন্ট নিয়ে কাজ করবেন তা নির্ধারণ করার জন্য আপনার বাজারে চাহিদা বুঝতে হবে। পাশাপাশি ওই সেগমেন্টের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে কারা আছে বা এমন প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে তাও বিশ্লেষণ করতে হবে। ভালো হয় যদি প্রতিযোগিতা তুলনামূলক কম হয় এমন কোন এক সেগমেন্ট পছন্দ করেন।
পণ্য নির্বাচন করার সময় আপনি এমন কিছু পণ্য বেছে নিন যার বাজারের প্রতিযোগিতা
তুলনামূলক কম এবং গ্রাহকদের কাছে তা আকর্ষণীয় এবং কার্যকরী। টার্গেটের অডিয়েন্স
চিহ্নিত, তাদের চাহিদা,বয়স এবং ক্রয়ের ক্ষমতা সম্পর্কে বিশদভাবে গবেষণা করা
উচিত। একবার টার্গেটেড অডিয়াস নির্ধারণ হয়ে গেলে নির্দিষ্ট ভাবে মার্কেটিং কৌশল
তৈরি করতে হবে।
বাংলাদেশ থেকে ড্রপশিপিং এর জন্য উপযুক্ত প্লাটফর্ম নির্বাচন
ড্রপশিপিং এর জন্য Shopify, WooCommerce-এর মত জনপ্রিয় কিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। তবে এই দুইটি প্লাটফর্মই সবচেয়ে জনপ্রিয়। Shopify ব্যবহার করা সহজ এবং এটি অটোম্যাটেড ড্রপশিপিং টুল যেমন Oberlo ইন্টিগ্রেট করতে সক্ষম।এছাড়াও BigCommerce, Magento এর মত অন্যান্য অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যা আপনি ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
প্ল্যাটফর্ম নির্বাচনের পর, সেটাপ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।পছন্দের প্লাটফর্মে
আপনার একটি দোকান খুলুন এবং সেটা গাইড অনুসরণ করে তা সেটআপ করুন।প্রয়োজনীয় টুলস
যেমন Spocket, Oberlo, AliDropship ইন্ডিগ্রেট করুন। এটি আপনার সরবরাহকারী থেকে
পণ্য যোগ করতে এবং অর্ডার প্রক্রিয়াকরণ করতে সহায়তা করবে।
বিশ্বস্ত সরবরাহকারী এবং সংযোগ স্থাপন
শিপিং এর জন্য সরবরাহকারী নির্বাচন করা এটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ। Alibaba এবং AliExpress হল দুইটি প্রধান প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি বিশ্বস্ত সরবরাহকারী খুঁজে পেতে পারেন। AliExpress সাধারণত ছোট অর্ডারের জন্য ভালো। অপরপক্ষেAlibaba বড় অর্ডার গ্রহণের জন্য সর্বোত্তম। সরবরাহকারির বিশ্বস্ততা যাচাই করে তাদের রেটিং এবং রিভিউ দেখে ভালোভাবে পর্যালোচনা করুন। এরপর সিদ্ধান্ত নিন।
বাংলাদেশের স্থানীয় সরবরাহকারী খুঁজে পেলে আপনার শিপিং এর সময়ে কমে যাবে এবং
ক্রেতারা দ্রুত পণ্য পাবে।এতে করে আপনার ব্যবসার উন্নতি দ্রুত হবে এবং কাস্টমার
এর কাছে আপনার চাহিদাও মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। আপনি বেশি বেশি অর্ডার গ্রহণ করতে
পারবেন ফলে আপনার ব্যবসায় তাড়াতাড়ি লাভ করতে পারবেন।
স্থানীয় সোর্সিং প্ল্যাটফর্ম বা সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে সরবরাহকারী খুঁজে পেলে
আপনার শিপিং খরচও কমে যাবে। তাই পরামর্শ এই যে স্থানীয় সরবরাহকারী খুঁজে বের
করুন। খেয়াল রাখবেন সরবরাহকারী যেন বিশ্বস্ত হয়। এভাবে আপনি আপনার ব্যবসার
উন্নতি ও সরবরাহকারী সাথে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
পেমেন্ট গেটওয়ে এবং ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনা
ড্রপশিপিং মূলত আন্তর্জাতিক পেমেন্ট অনুযায়ী কাজ করে।যেহেতু আপনার সরবরাহকারী
অন্য দেশের বা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের হতে পারে তাই পেমেন্ট ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে
জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।তা নাহলে পরবর্তীতে সমস্যা হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে
সাধারণত PayPal সরাসরি কাজ করে না তবে বিকল্প ক্ষেত্র বিবেচনায় Payoneer, Stripe
মতো গেটওয়ে প্রসেসেও লেনদেন করা যায়।
আপনি যদি PayPal একাউন্ট খোলা সম্পর্কে জানতে চান বা কিভাবে বাংলাদেশ থেকে অ্যাকাউন্ট খুলবেন তা জানতে আমাদের এই লিংকটি থেকে ঘুরে আসতে পারেন,
Payoneer একটি সহজ পেমেন্ট গেটওয়ে, যারা বাংলাদেশে ভালোভাবে কাজ করে। Stripe এর মাধ্যমে ক্রেডিট কার্ড পেমেন্ট গ্রহণ করা সম্ভব হয়। এই পেমেন্টগুলি সহজেই আপনার শিপিং স্টোর থেকে ইন্টিগ্রেট করা যায়। এই পেমেন্ট প্রসেস গুলি আপনার ব্যবসার গতি বৃদ্ধি করবে এবং কাজকে সহজ করবে।
মার্কেটিং ও অ্যাডভার্টাইজমেন্ট স্ট্র্যাটেজি
যে কোন ব্যবসায় দ্রুত সফলতা পাওয়ার জন্য যে বিষয়টি অপরিহার্য সেটি হল
প্রচার-প্রচারণা অর্থাৎ মার্কেটিং এন্ড অ্যাডভার্টাইজমেন্ট। ড্রপশিপিং
ব্যবসায় সফলতা পাওয়ার জন্য মার্কেটিং অপরিহার্য। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম বর্তমানে
সোশ্যাল মিডিয়ায় মার্কেটিং করার একটি সর্বোত্তম প্ল্যাটফর্ম।
সোশ্যাল মিডিয়াম মার্কেটিং করে আপনি আপনার পণ্য প্রচার করতে পারেন। টার্গেট
অডিয়েন্স এর কাছে আপনার পণ্যের প্রচার করে এবং বিভিন্ন কনটেন্ট কৌশল
ব্যবহার করে তাদের আকর্ষণ পেতে পারেন। সঠিক সময় সঠিক বার্তা দিয়ে বিজ্ঞাপন
চালিয়ে যেতে সক্ষম হলে আপনি আপনার ব্যবসার মার্কেটিং করে লাভবান হতে
পারেন।
শুধু মার্কেটিং করে হবে না আপনার SEO ব্যবহার করা প্রয়োজন রয়েছে। SEO ও Google Ads ব্যবহার করে আপনি গুগলে ভালো র্যাংক করতে পারেন। ভালো র্যাংক থাকলে ক্রেতা যখন যে কোন পণ্য সার্চ করবে অতএব, আপনার সেক্টরের পন্য গুগলে সার্চ করবে তখন আপনার ওয়েবসাইটটি সকলের আগে থাকবে। এর ফলে আপনার ওয়েবসাইট ট্রাফিক বৃদ্ধি পাবে।
অর্ডার প্রক্রিয়াকরণ এবং শিপিং ব্যবস্থা
গ্রাহক সেবা এবং সহায়তা প্রদান
কিভাবে ড্রপশিপিং ব্যবসার উন্নতি করবেন
- নতুন পণ্য সংযুক্ত করুন।
-
SEO এবং কনটেন্ট মার্কেটিং করুন।
- গ্রাহক সেবা উন্নত করুন।
-
বিজ্ঞাপন এবং প্রচারণার কৌশল আপডেট করুন।
-
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবহার কর।
-
সব সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ থাকুন।
- শিপিং প্রসেস উন্নত করুন।
-
কাস্টমারদের জন্য ডিসকাউন্ট এবং অফার এর ব্যবস্থা করুন।
- ফিডব্যাক এর অপশন রাখুন।
-
ফিডব্যাক এবং রিভিউ বাস্তবায়ন করুন।
মাই আর্টিকেল কুইল এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url