পেপাল একাউন্ট খুলুন বাংলাদেশ থেকে : সহজ গাইড [২০২৪]
পেপাল একাউন্ট খুলুন বাংলাদেশ থেকে সহজ ও বিস্তারিত নির্দেশিকা জেনে নিন কিভাবে কয়েকটি সহজ
স্টেপ অবলম্বন করে পেপাল একাউন্ট খুলবেন এবং তা ভ্যারিফাই করবেন। বাংলাদেশ থেকে
কি পেপাল ব্যবহার করা সম্ভব? উত্তর জানুন।
পেপাল একাউন্ট সম্পর্কিত সকল প্রকার জানা-অজানা তথ্য জানুন আমাদের আজকের এই
ব্লগটি থেকে। আশা করি সকল সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।
সূচিপত্র: পেপাল একাউন্ট কিভাবে খুলবেন: সহজ গাইড [২০২৪]
- পেপাল(PayPal) একাউন্ট কি এবং কেন প্রয়োজন
- পেপাল একাউন্ট খোলার পূর্বশর্ত
- পেপাল একাউন্ট খোলার ধাপসমূহ
- পেপাল একাউন্ট ভেরিফিকেশন
- বাংলাদেশ থেকে কি পেপাল ব্যবহার করা যাবে
- পেপাল এর সুবিধা ও অসুবিধা
- পেপাল এর সাধারণ সমস্যার সমাধান
- পেপাল নিয়ে শেষ কথা ও টিপস
পেপাল(PayPal) একাউন্ট কি এবং কেন প্রয়োজন
পেপাল(PayPal) হলো একটি অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেম যা আপনাকে ইন্টারনেটে
নিরাপদভাবে অর্থ লেনদেন করতে সাহায্য করবে। আপনি অনলাইন এর মাধ্যমে কেনাকাটা বা
টাকা লেনদেন করতে পারেন খুব দ্রুততার সাথে। আন্তর্জাতিক লেনদেন এর ক্ষেত্রে পেপাল
হতে পারে আপনার জন্য সর্বত্তম মাধ্যম।
বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য পেপাল খুব গুরুত্বপূর্ণ। তারা সকল লেনদেন
সাধারণত পেপাল একাউন্ট এর মাধ্যমেই করে থাকেন। ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে আপনাকে
পেপাল একাউন্ট এ অর্থ পাঠানো হবে। সেখান থেকে আপনি আপনার দেশে ব্যাংক একাউন্টে
টাকা ট্রান্সফার করে ব্যবহার করতে পারেন। পেপাল একাউন্টের মাধ্যমে ব্যাংক
একাউন্ট, ক্রেডিট-ডেবিট কার্ডে সংযুক্ত করতে পারেন।
পেপাল একাউন্ট খোলার পূর্বশর্ত
পেপাল একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে আমাদের কিছু পূর্বশর্ত মানতে হবে। এখন আমরা সেটি
সম্পর্কে জানবো:
কি কি তথ্য লাগবে তা জেনে নেইঃ
- একটি লিগ্যাল ই-মেইল অ্যাড্রেস
- একটি স্ট্রং পাসওয়ার্ড
- ব্যাক্তিগত তথ্য যেমন নিজের নাম, ঠিকানা ও ফোন নাম্বার
- ব্যাংক একাউন্ট কিংবা ক্রেডিট/ডেবিট কার্ডের তথ্য
পেপাল সাপোর্টেড দেশসমূহ
অনেক দেশেই পেপাল সাপোর্টেড না। দুঃখের বিষয় এই যে বাংলাদেশেও এখনো সম্পুর্ণভাবে
পেপাল সাপোর্ট করেনা। তবে বিশেষ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে পেপালের কিছু সীমিত
সুবিধা পাওয়া যাই।
এই কিছু তথ্য বা পূর্বশর্ত গুলি রয়েছে যা পেপাল একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে।
পেপাল একাউন্ট খোলার ধাপসমূহ
পেপাল একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে যে সকল ধাপগুলি আমাদের অনুসরন করতে হবে সেগুলি এখন
স্টেপ বাই স্টেপ দেখিয়ে দিবো
১. পেপাল ওয়েবসাইটে লগইন:
প্রথমে পেপাল (PayPal) এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। তারপর সেখানে বা এ প্রবেশ করুন।
২. সাইন আপ বা রেজিস্ট্রেশন:
সাইন আপ বা রেজিস্টার বাটনে ক্লিক দিলে ২টি অপশন দেখতে পাবেন। ১. এবং ২. । আপনি
ব্যক্তিগত লেনদেন করতে চাইলে এ ক্লিক করবেন।
৩. তথ্য প্রদান:
এখন পরবর্তী কাজ আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদানের। পেপাল আপনার কাছে যে যে তথ্য
চাইবে সব গুলো সঠিক তথ্য প্রদান করবেন। সঠিকভাবে পূরণ হয়ে গেলে বাটনে ক্লিক
দিবেন।
৪. ই-মেইল ভেরিফিকেশন:
সর্বশেষ প্রক্রিয়া হলো ই-মেইল ভেরিফিকেশন। আপনার প্রদত্ত ইমেল একাউন্টে
ভেরিফিকেশন লিংক যাবে। আপনার ইমেল এ প্রবেশ করে ভেরিফিকেশন লিংকে ক্লিক দিয়ে
আপনার একাউন্টটি ভেরিফাই করুন।
তবে এখনে একটু সমস্যা আছে। আপনি যদি বাংলাদেশি হন তাহলে এই সমস্যার সম্মুখীন
হবেন। আপনি যখন অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করতে যাবেন তখন আপনি ফোন নাম্বার দেওয়ার
ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এর অপশান খুঁজে পাবেন না। তাই আপনি এক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বেন।
যদি আপনার অন্য দেশের পরিচিত কাছের লোক থাকে যে কিনা আপনার হয়ে সেই দেশের নাম্বার
দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে পারে তাহিলে খুব ভালো হয়। তা না হলেও আমাদের কাছে
বিকল্প পদ্ধতি আছে। বিকল্প পদ্ধতিটি হল কিছুক্ষনের জন্য ফোন নাম্বার ভাড়া নেওয়া।
অনলাইনে এমন কিছু ওয়েবসাইট আছে যারা আপনার কাছে কিছুক্ষনের জন্য যেকোনো দেশের ফোন
নাম্বার কিনতে পারবেন। এগুলার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হলো
5sim.net। এই
ওয়েবসাইটে আপনি যেকোনো দেশের নাম্বার কিনতে পারবেন খুব সল্প খরচেই।
ধরে নি আমরা ইন্ডিয়ার ফোন নাম্বার ক্রয় করব। তাহলে সেই ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রথমে
পেপাল অপশানটি সিলেক্ট করব। কারন আমরা পেপাল এর জন্য নাম্বার কিনবো। এর পর যে
দেশের নাম্বার কিনতে চাই সেটি সিলেক্ট করবো। তাহলেই সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
পেপাল একাউন্ট ভেরিফিকেশন
ক্রেডিট কার্ড বা ডেবিট কার্ড যোগ করা:
একাউন্ট ভেরিফিকাশনে পর পেপাল একাউন্টে আপনার ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড অ্যাড করতে
হবে। এই জন্য সতর্কের সাথে কার্ড ডিটেলস প্রদান করুন।
ব্যাংক একাউন্ট লিংক করা:
যদি আপনি টাকা পাঠানোর বা পেমেন্ট নেওয়ার সময় ব্যাংক একাউন্ট ব্যাবহার করতে চান
তাহলে অবশ্যই সেটি পেপাল এ লিংক করবেন। আপনি যদি ব্যাংক একাউন্ট লিংক করে থাকেন
তাহলে ছোট ডিপোজিট ও তারা আপনার ব্যাংক একাউন্টে পাঠাবে।
বাংলাদেশ থেকে পেপাল ব্যবহার করা যাবে কি
পেপাল একটি জনপ্রিয় মানি ট্রান্সফার ওয়েবসাইট। যেখান থেকে আমরা বিভিন্ন
মার্কেটপ্লেস থেকে পেমেন্ট নিয়ে থাকি এবং উইথড্র করার জন্য এই ওয়েবসাইটে আমরা
ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু বাংলাদেশের আমরা এ পেপাল ব্যবহার করতে পারি না। দুঃখের
বিষয় এই যে বাংলাদেশে অফিশিয়ালি পেপাল এর কোন সাপোর্ট নেই।
তবে বিশেষ কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে পেপালের কিছু সীমিত সুবিধা পাওয়া যাই। অনেকেই
বিকল্প পদ্ধতি ব্যবহার করেন। অবৈধ্য উপায়ে পেপালের নজর এরিয়ে একাউন্ট ক্রিয়েট করে
থাকেন। কিভাবে তাহলে এই অবৈধ উপায়ে পেপাল একাউন্ট খোলা যায় চলুন দেখি,
বাংলাদেশে বর্তমানে নামে একটি পেপাল এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে।
কিন্তু আমার মতে এটা ব্যবহার করা অনেক কষ্টদায়ক। এক্ষেত্রে পেপাল এ পাওয়া
পেমেন্ট XOOM সেন্ড হয়। আর সেখান থেকে আপনাকে আবার টাকা তুলতে হবে। আমার
কাছে পার্সোনালি মনে হয় এটি অনেক ঝামেলার একটি বিষয়।
আপনার যদি পরিবারের কেউ দেশের বাইরে থাকে, যে দেশে পেপাল সাপোর্ট করে। তাদের
মাধ্যমে আপনি পেপাল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারবেন। বাংলাদেশে কিছু কিছু ব্যক্তি পেপাল এ বিজনেস একাউন্ট ইউজ করেন। তারা এটি
থার্ড পার্টি অর্থাৎ অন্য কোন দেশ দেখিয়ে পেপাল একাউন্ট ব্যবহার করে। তবে এ পেপাল একাউন্ট কবে বাংলাদেশে এক্সেস পাবে সেটি আমাদের সকলেরই অজানা।
পেপাল এর সুবিধা ও অসুবিধা
পেপাল আপনাকে ইন্টারনেটে নিরাপদভাবে অর্থ লেনদেন করতে সাহায্য করবে। আন্তর্জাতিক
লেনদেন এর ক্ষেত্রে পেপাল হতে পারে আপনার জন্য সর্বত্তম মাধ্যম। এই ধরনের যেমন
সুবিধা পেপাল দেয় তেমনি বাংলাদেশে পেপাল এর সাপোর্ট নেই; এই অসুবিধাও আছে। এই রকম
সকল সুবিধা অসুবিধা গুলি আপনাদের সুবিধার্থে পয়েন্ট আকারে উপস্থাপন করছি,
সুবিধা:
১. পেপাল এর মূল সুবিধা হলও এটিতে লেনদেন করা খুবই দ্রুত ও নিরাপদ।
২. পেপাল একটি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গ্রহণের একটি সহজ মাধ্যম।
৩. পেপাল এ কেনাকাটা করলে তারা প্রমান স্বরূপ বিল প্রদান করে থাকে।
অসুবিধা:
১. বাংলাদেশীদের পেপাল নিয়ে মূল অসুবিধা হলো যে বাংলাদেশে এখনো পর্যন্ত পেপাল
সরাসরি সাপোর্ট করেনা।
২. কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ফি অনেক বেশি নিয়ে থাকে।
৩. এক কারেন্সি থেকে আরেক কারেন্সি তে কনভার্ট করার সময় অতিরিক্ত চার্জ করে।
পেপাল এর সাধারণ সমস্যার সমাধান
১. পেপাল একাউন্ট লগইন সমস্যা:
অনেক ক্ষেত্রে লগইন করার সময় আমরা ভুল ইমেইল ও পাসওয়ার্ড প্রদান করে থাকি। যদি
এমন কোন সমস্যা হয়ে থাকে তবে পাসওয়ার্ড রিসেট করে, নতুন পাসওয়ার্ড প্রদান করবেন।
২. পেমেন্ট রিজেকশন:
পেমেন্ট রিজেক্ট হলে অবশ্যই ব্যাংক এর সাথে যোগাযোগ করুন। মূলত বাংলাদেশে পেপাল
সার্ভিস না থাকার কারণে পেমেন্ট সাপোর্ট করেনা।
পেপাল নিয়ে শেষ কথা ও টিপস
পেপাল একাউন্ট খোলার এবং ব্যবহারের সময় সবসময় নিরাপত্তার ব্যপারটি নিশ্চিত করতে
কাজ করতে হবে। আপনার পাসওয়ার্ড ও আইডি নং ও সকল প্রকার কার্ড ডিটেলস গোপন রাখুন।
লেনদেন এর আগে ফি ও শর্তাবলীর সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। অবৈধ উপায় হতে এরিয়ে
চলুন।
মাই আর্টিকেল কুইল এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url