গলা খুসখুস ও শুষ্ক কাশি দূর করার ১৫টি উপায়

গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার উপায় জানাতে আজ এখানে এসেছি। আমাদের প্রায় সকলের ঠান্ডা লাগা, সংক্রমণ, এলার্জি বা আবহাওয়া পরিবর্তন এর জন্য এই ঠান্ডা, কাশি হয়। যা আমাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাড়ায়। এর থেকে তাহলে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় কি?

গলা-খুসখুস-ও-শুষ্ক-কাশি-দূর-করার-১৫টি-উপায়ঘরোয়া কিছু টিপস অনুসরণ করে, সিরাপ খেয়ে বা হোমিওপ্যাথি ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে আপনি কিভাবে গলা খুসখুস ও কাশি দূর করবেন টা নিয়ে আজ বিস্তারিত আলোচনা করবো। চলুন গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার ১৫টি উপায় জেনে নেই,

পেজ সূচিপত্রঃগলা খুসখুস ও কাশি দূর করার ১৫টি উপায়

গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার উপায়

ঠাণ্ডার আমেজ পড়তে শুরু করেছে। নেমে চলেছে তাপমাত্রা। তবে দিনের থেকে রাতে ঠান্ডা বেশি পড়ছে খেয়াল করেছেন কি? এই ঠান্ডা গরম তারতম্যের জন্য প্রায় সকলের গলা খুসখুস ও কাশির সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আবার শীতে এই জীবাণুগুলো বেশি সক্রিয় হয়। কাশি খুব বিরক্তকর একটা রোগ তাইনা বলুন? কাশতে কাশতে বুকে ব্যথা উঠে যায়। কি যে এক সমস্যা।

গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার উপায়গুলো নিয়ে আজ বিস্তারিত লিখব। কিভাবে এই সমস্যা দূর করা যায় এটাই আজ আপনাদের আমি শিখাবো। আপনি চাইলে ঘরোয়া উপায়ে গলা খুসখুস ও কাশি দূর করতে পারেন, আবার চাইলে ওষুধ গ্রহণ করেও সমাধান করতে পারেন। তবে আমি মনে করি ওষুধ গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই ঘরোয়া উপায়গুলো ৩/৪ দিন অনুসরণ করুন। যদি তাও না কমে তবে ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন।

গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায়

ওষুধ গ্রহণ করার পূর্বে অবশ্যই ঘরোয়া উপায়ে নিজেকে সুস্থ করার চেষ্টা করবেন। এতে আপনার শরীরের শ্বেত রক্তকণিকাগুলো সক্রিয় হওয়ার ক্ষমতা বেড়ে যাবে। আপনার শরীর নিজেই তখন রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দিবে। কোনো ওষুধ হলে চেষ্টা করুন ঘরোয়া উপায়ে আগে চিকিৎসা করার। ৩/৪ দিন দেখুন। যদি কমতে থাকে তাহলে ঘরোয়া উপায় মেনে চলুন।

নাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ গ্রহণ করুন। গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায় অনেকগুলো আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আর এই সব উপাদানই সকলের বাসায় সর্বদা থাকে। চলুন তবে উপায়গুলো আপনাদের জানিয়ে দেই,

গলা-খুসখুস-ও-শুষ্ক-কাশি-দূর-করার-১৫টি-উপায়গরম পানি পান করুন: গলা খুসখুস বা কাশি হলে কখনো ঠান্ডা বা নরমাল পানি পান করবেন না। এতে আপনার ঠান্ডার সমস্যা আরো বেড়ে যাবে। তাই পানিকে কুসুম গরম করে কিছুক্ষন পর পর খাবেন।

গলাকে কখনো আদ্র থাকতে দিবেন না: সারাদিনে ২ লিটার পানি পান করুন। আপনার গলা আদ্র থাকলে আপনার ঠাণ্ডার সমস্যা আরো বেড়ে যাবে।

গরম পানির ভাপ নেওয়া: গরম পানির ভাপ আপনার ঠান্ডা কমাতে আর কফ কমাতে সাহায্য করে। পানি ফুটিয়ে নিন। তারপর মাথার উপরে কাপড় রেখে সে গরম ভাপ নাক ও মুখ দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন। দিনে ১-২ বা এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন। এতে আপনার ঠাণ্ডার সমস্যা চলে যাবে।

লবণ ও কুসুম গরম পানির গার্গল: গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার উপায় হলো এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চামচ লবণ নিন। দিনে ৪-৫ বার গার্গল করুন। এতে জীবাণু দূর হবে এবং গলার খুসখুসানিও দূর হবে।

মধু: ১. আদাকে থেতলিয়ে সেটিকে ১কাপ পানির মধ্যে দিন। তারপর ২ মিনিট পর নামিয়ে পানি ছেঁকে নিন। তার মধ্যে ১ চামচ মধু দিয়ে চা এর মতো করে পান করুন। আদাতে রয়েছে এন্টি - ইনফ্লেমেটরি গুন এবং মধু জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। যা ঠাণ্ডার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।

২. আবার ১ কাপ পানিকে কুসুম গরম করে নিন। সেটি নামিয়ে এক ফাক লেবু ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে পান করুন।

তুলসী পাতা: গলা খুসখুস ও কাশি কমানোর জন্য তুলসী পাতার বিকল্প হয়না। এটি প্রাকৃতিক এন্টি - ব্যাকটেরিয়াল ওষুধ। ১ কাপ পানির মধ্যে ৪-৫ টি তুলসী পাতা দিয়ে সেটি ফুটিয়ে পান করুন।

মসলা চা: আদা, গোলমরিচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, চা এর লিকার দিয়ে চা বানিয়ে নিন। প্রতিদিন একবার হলেও খাবেন। এই সবকয়টি উপাদান ঠান্ডা, কাশি কমাতে সাহায্য করে।

কাঁচা হলুদ: ১ মগ দুধের মধ্যে পরিমাণমতো কাঁচা হলুদ মিশিয়ে সেটি পান করুন। এটি আপনার কাশি নিরাময় করতে সাহায্য করবে।

গলা খুসখুস দূর করার সিরাপ

গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার উপায় আরেকটি হলো সিরাপ খাওয়া। অনেক সময় অনেকের ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করলে কাশি কমে না। তাদের জন্য কিছু কার্যকর ওষুধ রয়েছে যা বাজারে সহজলভ্য। তবে বলে রাখি নিজে থেকে ওষুধ সেবন না করে অবশ্যই চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন। আর এই সমস্যা যদি আপনার দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে তবে দেরি না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

গলা খুসখুস মূলত এলার্জিটিক সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। তাই এন্টি - হিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সেবন করা উচিত।

১. এডোভাস সিরাপ (Adovas),

২. ডিভাস (Devas),

৩. ডেক্সপোটেন প্লাস (Dexopoten Plus),

৪. ডি-কফ (D Koff),

৫. বাসক (Basok)।

শীতকালে কাশি থেকে মুক্তির উপায়

দেখা যায় শীতকালে বাংলাদেশের মানুষের ঠান্ডা বা কাশি হওয়ার প্রবণতা বেশি হয়। বাংলাদেশ যেহেতু গ্রীষ্ম প্রধান দেশ তাই শীতকালে মানুষের এডজাস্ট করতে কিছুটা কষ্ট হয়। তাই শীতকালে কাশি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। শীত পড়ার সাথে সাথে আপনাকে এমন পোষাক পরতে হবে যা আপনার শরীর গরম রাখতে সক্ষম হয়।

গলা-খুসখুস-ও-শুষ্ক-কাশি-দূর-করার-১৫টি-উপায়আবার এই সময় নাক দিয়ে ধুলা ও ঠান্ডা ঢুকে তাই মাস্ক ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। প্রতিদিন ঘরোয়া উপায়ে নিজেকে সুস্থ রাখার পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করবেন। এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো আপনাকে ঠান্ডা লাগা থেকে আগেই রক্ষা করতে সাহায্য করবে। আর ঠান্ডা যদি একবার লেগেই যায় তবে ঠান্ডা থেকে মুক্তি পাওয়ার পদ্ধতিগুলো মেনে চলুন, যা আমরা আগেই ব্যাখ্যা করে রেখেছি।

গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার উপায় নিয়ে লেখকের শেষ কথা

গলা খুসখুস ও কাশি দূর করার উপায় নিয়ে উপরে বিশ্লেষণ করে অনেক সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তার মধ্যে আমি ঘরোয়া পদ্ধতি, ঔষধ, হোমিওপ্যাথি ঔষধ সবকিছু নিয়েই আলোচনা করেছি। যেসব ওষুধ এর নাম দিয়েছি তা বাজারে সহজলভ্য। তবে আমার মতে গলা খুসখুস ও কাশি দূর করতে প্রাকৃতিকভাবে বাসায় বসে ঘরোয়া উপায়ে নিজেকে সুস্থ করার চেষ্টা করুন।

আদা, মধু, হলুদ, পানি, তুলসী পাতা সর্বদা আমাদের বাসাতেই থাকে। এসব ব্যবহার করে যদি আমরা সুস্থ হতে পারি তবে ঔষধ খাওয়ার কি প্রয়োজন বলুন? তবে এরপরও যদি আরাম না পাওয়া যায় তবে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে শরণাপন্ন হন। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজের মন মত ওষুধ সেবন করবেন না। নিজের প্রতি যত্নবান হন। সুস্থ দেহ ও সুন্দর মন উভয়ই জরুরী।

FAQ

1. গলা খুসখুস ও কাশি কি কারণে হয়?

গলা খুসখুস ও কাশি সাধারণত ফ্লু, ধুলাবালি, এলার্জি, আবহাওয়া এর পরিবর্তন এর কারণে হয়ে থাকে। আবার ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি বা শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে কাশি হতে পারে।


2. গলা খুসখুস ও কাশি থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া উপায় কি কি?

লবণ ও কুসুম গরম পানির গার্গল: এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে আধা চামচ লবণ নিন। দিনে ৪-৫ বার গার্গল করুন। এতে জীবাণু দূর হবে এবং গলার খুসখুসানিও দূর হবে।

মধু: ১ কাপ পানিকে কুসুম গরম করে নিন। সেটি নামিয়ে এক ফাক লেবু ও ১ চামচ মধু মিশিয়ে নিয়ে পান করুন।

মসলা চা: আদা, গোলমরিচ, লবঙ্গ, দারুচিনি, চা এর লিকার দিয়ে চা বানিয়ে নিন। প্রতিদিন একবার হলেও খাবেন। এই সবকয়টি উপাদান ঠান্ডা, কাশি কমাতে সাহায্য করে।

গলাকে কখনো আদ্র থাকতে দিবেন না: সারাদিনে ২ লিটার পানি পান করুন। আপনার গলা আদ্র থাকলে আপনার ঠাণ্ডার সমস্যা আরো বেড়ে যাবে।


3. গলা খুসখুস ও কাশির জন্য সিরাপ কি কি?

১. এডোভাস সিরাপ (Adovas),

২. ডিভাস (Devas),

৩. ডেক্সপোটেন প্লাস (Dexopoten Plus),

৪. ডি-কফ (D Koff),

৫. বাসক (Basok)।


4. কাশির সিরাপ সেবনের সময় কি ধরনের সতর্কতা পালন করতে হবে?

কাশির সিরাপ সেবনের পূর্বে ডাক্তার এর শরণাপন্ন হওয়া উচিত। বিশেষত বয়স্ক ও শিশুদের জন্য সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কাশির সিরাপ খেলে ঘুম আসে তাই গাড়ি চালানো অবস্থায় বা জরুরী কাজের সময় এটি গ্রহণ করা উচিত নয়।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাই আর্টিকেল কুইল এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url