আপনার ছোট ফ্ল্যাটের জন্য স্মার্ট ফার্নিচার আইডিয়া

ছোট ফ্ল্যাট সুন্দর করে সাজাতে বক্স খাট, চেষ্ট অব ড্রয়ার, কর্ণার শেলফ, ফোল্ডিং টেবিল ও মডুলার সোফা রাখুন। জিনিসপত্র রাখতে স্টোরেজ আছে এরকম ফার্নিচার কিনুন।
আপনার-ছোট-ফ্ল্যাটের-জন্য-স্মার্ট-ফার্নিচার-আইডিয়া
ছোট ফ্ল্যাটে সীমিত জায়গায় সর্বোচ্চ সুবিধা পাবার জন্য স্মার্ট ফার্নিচারের বিকল্প নেই। কিন্তু কোন কোন স্মার্ট ফার্নিচার নিলে ছোট রুমেও সকল দরকারি জিনিসপত্র রাখতে কোনো অসুবিধা হবে না তা অনেকেই জানেনা। তাই আজ আমরা ছোট ফ্ল্যাটকে পরিপূর্ণ করতে কি কি ফার্নিচার প্রয়োজন হবে তা নিয়ে কথা বলবো।

আজকাল ছোট ফ্ল্যাট কেন এত জনপ্রিয়?

আজকাল ছোট পরিবার নিয়ে থাকার জন্য সবাই ছোট এপার্টমেন্ট খুঁজে। এতে কম খরচে অনেক আধুনিক ইন্টেরিয়রের ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট পাওয়া যায়। আবার অনেকে মিনিমাল লাইফ ভাল লাগার কারণে জন্য ছোট ফ্ল্যাট পছন্দ করে থাকেন। মূল কথা, ছোট ফ্ল্যাটে কম জিনিস লাগে আর সীমিত খরচে বেডরুম, ডাইনিং রুম ও কিচেনসহ স্টাইলিশ থাকার জায়গা হয়ে যায়।

ছোট ফ্ল্যাটে কি কি স্মার্ট ফার্নিচার প্রয়োজন হয়?

ছোট ফ্ল্যাটের ফার্নিচার কেনার প্রথম শর্ত হলো অল্প সাইজে বেশি ফাংশনালিটি পাওয়া যাবে এরকম ডিজাইন সিলেক্ট করা। যেমনঃ ফার্নিচার নির্মাতা কোম্পানি হাতিল-এর ওয়েবসাইটে গেলে কিছু বক্স খাটের ডিজাইন দেখা যায় যার ড্রয়ার বা কেবিনেটে অনেক ধরনের জিনিসপত্র রাখা সম্ভব। এরকমই বিশেষ কিছু ফার্নিচার আছে যা কিনলে আপনার বেডরুমে এবং লিভিং রুম স্মার্ট হয়ে যাবে।

১. বক্স খাট

বক্স খাটের নিচে প্রচুর পরিমাণে জায়গা থাকে। মডেল ভেদে বিভিন্ন রকম বক্স খাটে ড্রয়ার ও কেবিনেটের মত স্টোরেজ সিস্টেম দেখা যায়। এগুলো ব্যবহার করলে ছোট রুমের মধ্যে অনেক জামা কাপড় ও জিনিসপত্রের ভিড় হবে না।

সাধারণ স্টোরেজের পাশাপাশি বক্স খাটের হেডবোর্ডে শেলফের মত কেবিনেট করা থাকে। এতে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপাতি—যেমনঃ ঘড়ি, চশমা, ফোন, বই, ল্যাম্প ইত্যাদি রাখা যায়। তাই বক্স খাট কিনলে আলাদা করে বেড সাইড টেবিল কেনার দরকার হবে না।

২. চেষ্ট অব ড্রয়ার

ওয়ারড্রোব বা আলমারির বিকল্প হতে পারে চেষ্ট অব ড্রয়ার। এটা বেডরুমে বেডের পাশেই রাখতে পারবেন। অনেকগুলো ড্রয়ার থাকার কারণে যার যার জিনিসপত্র আলাদা গুছিয়ে রাখা যায়। এতে ড্রয়ারের বাইরে আলাদা কোনো কিছু না থাকায় এটা খুব কম জায়গা নেবে। বেডের পাশে বা রুমের এক কর্ণারে রাখতে পারবেন।

৩. কর্ণার শেলফ

ছোট ফ্ল্যাটের লিভিং রুমে খুব বড় বুক শেলফ বা টিভি কেবিনেট না রেখে ছোট কর্ণার শেলফ রাখতে পারবেন। এই শেলফগুলো বেশ শৈল্পিক ও স্মার্ট হয়ে থাকে। কর্নারে রাখার কারণে কখনোই হাঁটা চলা বা বসায় কোনোরকম সমস্যা তৈরি হবেনা। কর্ণার শেলফ ছোট বলে এর পিছনে খরচও বেশ কম হবে। আর এটা এমন একটা ফার্নিচার যা লিভিং রুম ও বেডরুম সবখানেই ব্যবহার করা যায়।

৪. ফোল্ডিং রিডিং টেবিল

ঘর ছোট হোক অথবা বড়, বেডরুমে স্টাডি টেবিল তো লাগবেই। এক্ষেত্রে ফোল্ডিং রিডিং টেবিলগুলো বেশ কাজে দেয়। এতে বইখাতা রাখার সাথে বেডসাইড টেবিলের মত অন্যান্য জিনিস ও রাখা যাবে, আবার টেবিলের বিভিন্ন অংশ ভাজ করে বেডরুমের জায়গা বাড়িয়ে ফেলা যায়। এধরণের টেবিলগুলো বাচ্চা ও বড় সবার জন্য বেশ মানানসই।

৫. মডুলার ও স্টোরেজ সোফা

ফার্নিচারের দোকানে— মডুলার ও স্টোরেজ, এই দু ধরণের স্মার্ট সোফা পাবেন। সুবিধা হলো এতেও বক্স খাটের মত অনেকগুলো স্টোরেজ অপশন পেয়ে যাবেন। একটা বড় সিঙ্গল সীটার সোফাতে যে স্পেস লাগে তার চেয়ে টু সীটার মডুলার সোফাতে তুলনামূলক কম স্পেস লাগবে। আর ভিন্ন কিছু নিতে চাইলে সোফা কাম বেডগুলো দেখতে পারেন।

ছোট ফ্ল্যাটে কোন কোন ফার্নিচার রাখা অপ্রয়োজনীয়?

আধুনিক ফার্নিচারের লিস্ট করলে শেষ হবার না। লিভিং রুম, ডাইনিং, কিচেনসহ সবখানে রাখার জন্য ফার্নিচার আছে। একই ফার্নিচারের ডজন ডজন ভেরিয়েন্ট থাকতে পারে। কিন্তু ছোট ফ্ল্যাটে এতকিছু রাখার কথা ভাবলে তো চলবে না। এখানে বেশ কিছু ফার্নিচার সুন্দর হলেও ইগনোর করতে হবে। যেমন—
  • লিভিং রুমে ডিনার ওয়াগন, শোকেস, থ্রি সীটার সোফা, শু র‌্যাক এসব রাখলে জায়গা সংকট হবে, তাই এগুলো রাখা যাবেনা। এর বদলে ক্লথ স্ট্যান্ড, শেলফ, লবি চেয়ার এসব রাখা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
  • বেডরুমে বেড সাইড টেবিল, বড় ড্রেসিং টেবিল, আলমিরা, ওয়ারড্রব, কিং সাইজ বেড এসব রাখা যাবে না। এসবের বদলে সেমি ডাবল বেড বা কুইন সাইজ বেড নিতে হবে।
  • বড় ৪ থেকে ৬ সীটারের ডাইনিং টেবিল সেট কখনোই রাখা উচিৎ না, এগুলো ছোট ফ্ল্যাটের সব জায়গা একাই দখল করে নেবে। বাসায় খুব বেশি গেস্ট না এলে দুজন বসা যায় এরকম ছোট টেবিল চেয়ার সেট নেওয়া ভাল হবে।

কেন স্মার্ট ফার্নিচার ছাড়া ছোট ফ্ল্যাটে অসুবিধা হয়?

স্মার্ট ফার্নিচারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো সাদামাটা ডিজাইন। এধরণের ফার্নিচারে পুরনো আমলের আঁকাবাঁকা নকশার মত অতিরিক্ত কোনো অংশ থাকার দরকার হয়না। ছোট ফ্ল্যাটে স্মার্ট ফার্নিচার না থাকলে তিন ধরনের সমস্যাতে পড়বেন—
  • জায়গার অভাব হবে: পুরনো ট্রাডিশনাল স্টাইলের ফার্নিচারে ছোট ফ্ল্যাটে জায়গার অভাব দেখা দেয়।
  • গোছাতে অসুবিধা হবে: আগেকার ফার্নিচারে সবকিছু খোলা রাখতে হয়, ফলে ঘর অগোছালো দেখায়।
  • সুবিধা কম পাবেন: পুরনো ফার্নিচারগুলো স্মার্ট ফার্নিচারের মতো একাধিক কাজে লাগানো যায় না।
আবার অনেকসময় ভাড়া বাসা পরিবর্তন করা লাগতে পারে। তখন স্মার্ট ফার্নিচার ছোট গাড়িতে করেই নেওয়া যায়। এগুলো খুলে আলাদা করে নেওয়া যায় তাই পরিবহনের কাজে বাড়তি মানুষজনের দরকার হয়না।

পরিশেষ
ছোট ফ্ল্যাটে থাকলে স্মার্ট ফার্নিচার ব্যবহার অত্যন্ত জরুরি। এটি জায়গা বাঁচাতে সাহায্য করে এবং ঘরকে সুন্দর ও গোছালো রাখতে সাহায্য করে। তাই, ছোট ফ্ল্যাটে থাকলে স্মার্ট ফার্নিচার কেনার কথা ভাবুন। এতে করে ফ্ল্যাট ছোট হলেও মানুষ আপনার আর্ট ও রুচির তারিফ করবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মাই আর্টিকেল কুইল এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url